বাংলার তীর্থ – শ্রীধাম মায়া পুর

649

এই মহামারীকবলিত সময়ে মন চাইলেও অনেকেই আজ ভ্রমণ সুখ থেকে বঞ্চিত|বিশেষ করে তীর্থ যাত্রার সেই উৎসাহ ও রোমাঞ্চ অনেকেই হারিয়ে ফেলছি আজ থেকে শুরু করছি বাংলার তীর্থ নামে এই নতুন ধারাবাহিক সিরিজ যেখানে ভ্রমণ ও আধ্যাত্বিকতা এক সাথে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাবে|আজ প্রথম পর্বে শ্রীধাম মায়াপুর|

বাংলার প্রাচীনতম শহর গুলির অন্যতম মায়া পুর|বাংলায় সেন রাজাদের আমলে  নবদ্বীপ ছিল বাংলার রাজধানী। লক্ষণ সেন গৌড় থেকে তার রাজধানী সরিয়ে আনেন নবদ্বীপে। ১২০৬ সালে লক্ষণ সেনের আমলে বখতিয়ার খিলজি নবদ্বীপ জয় করেন ও তখন থেকেই বাংলায় প্রথম মুসলিম শাসন শুরু হয়। তখন নবদ্বীপ ছিল বাংলার শিক্ষালাভের প্রধান পীঠস্থান। 

পরবর্তীতে শ্রী চৈতন্য দেব এই নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীচৈতন্য দেবের জন্ম ভিটা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও নবদ্বীপে বর্তমানে ১৮৬ টি মন্দির আছে ও সব গুলিতেই ভজন ও কৃষ্ণনাম হয়। 

যে ইস্কন মন্দিরের দৌলতে মায়াপুরের আজ জগৎজোড়া নাম সেই মন্দির দিয়ে শুরু করা উচিৎ  গৌরতীর্থ মায়াপুর দর্শন। প্রথমে চন্দ্রোদয় মন্দির। মনোহর বাগিচা পেরিয়ে মন্দির। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের জীবন আখ্যান প্রদর্শিত। ইস্কন মন্দিরের মূল ফটকের ডাইনে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীপ্রভুপাদের বর্ণাঢ্য স্মৃতিমন্দির যেখানে বারো মাস কৃষ্ণপ্রেমি দের আনাগোনা লেগেই থাকে|

এই ইস্কন চত্বরে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই
ইস্কন মন্দির থেকে বেরিয়ে শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ। এর পর অদ্বৈত ভবন, ২৯ চুড়োর শ্রীচৈতন্য মঠ এবং শ্রীবাস অঙ্গন তথা খোল ভাঙার ডাঙা যা নিয়ে আছে ঐতিহাসিক কাহিনী, তা পরে বলছি| পাশেই ভক্তি সারঙ্গ গোস্বামী মহারাজ মঠ, জন্মভিটে তথা শ্রীমন্দির। ২৯ চুড়োর মঠের উল্টো দিকে পুণ্যিপুকুর শ্যামকুণ্ড, একই চত্বরে রাধাকুণ্ড সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ স্থল রয়েছে এই স্থানে|

এবার বলি খোল ভাঙার ডাঙা, এ রকম নাম কেন? শ্রীচৈতন্যের ঘোর বিরোধী ছিলেন এ অঞ্চলের প্রশাসক চাঁদ কাজী তথা মৌলানা সিরাজুদ্দিন। ফতোয়া জারি করে শ্রীচৈতন্যের নামকীর্তন বন্ধ করে দেন তিনি। সেই নিয়ম অমান্য করেই শ্রীচৈতন্য সাঙ্গোপাঙ্গকে নিয়ে নামকীর্তন বার করেছিলেন। যে ডাঙাতে শ্রীচৈতন্যের খোল ভেঙেছিলেন চাঁদ কাজী সেটাই হল খোল ভাঙার ডাঙা।

মূল মায়াপুর থেকে ৩ কিমি দূরে বামনপুকুর। সেখানেই চাঁদের সমাধিপীঠ এবং ৫০০ বছরের পুরনো গোলকচাঁপা গাছ। সব মিলিয়ে মায়াপুর বাঙালি, অবাঙালি, পশ্চিমবঙ্গ বাসী, ভিন রাজ্যের মানুষ থেকে বিদেশি সকলের কাছেই এই আকর্ষণীয় পর্যটন স্থল।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে রয়েছে|বল্লাল টিবি, গোশালা এবং নবদ্বীপ শহর দর্শনীয় স্থান|সময় সুযোগ হলে আগামী দিনে অবশ্যই ঘুরে আসুন মায়াপুর থেকে|খুব সহজেই কলকাতা থেকে বাসে ৪ ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায় মায়াপুর। অথবা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে কৃষ্ণনগর, সেখান থেকে বাসে মায়াপুর যাওয়া যায়|

কৌশিকী অমাবস্যার ব্যাবস্থা কাটিয়ে উঠলেও অবসর নেয়ার সময় নেই|জ্যোতিষ চর্চায় বর্তমানে  চেম্বারে ও অনলাইনে সর্বদা আমায় পাবেন আগের মতোই|প্রয়োজনে যোগাযোগ করবেন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|নমস্কার|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here