সনাতন ধর্মের দেব দেবী – মা মনসা

708

আজ নাগ পঞ্চমী আজ গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে মনসা পুজোর রীতি|আজকের পর্বে জানাবো কে দেবী মনসা|কি তার স্বরূপ এবং কিভাবে ও কেনো শুরু হলো তার পুজো|

মনসার জন্মকাহিনি প্রথম উল্লিখিত হয়েছে পুরাণগ্রন্থেই। মঙ্গলকাব্যে তাঁকে শিবের কন্যা বলা হলেও, পুরাণ অনুসারে তিনি ঋষি কশ্যপের কন্যা। একদা সর্প ও সরীসৃপগণ পৃথিবীতে কলহ শুরু করলে কশ্যপ তাঁর মন থেকে মনসার জন্ম দেন। ব্রহ্মা তাঁকে সর্প ও সরীসৃপদের দেবী করে দেন। মনসা মন্ত্রবলে বিশ্বের উপর নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। এরপর মনসা শিবের সঙ্গে সন্ধিস্থাপন করেন। শিব তাঁকে কৃষ্ণ-আরাধনার উপদেশ দেন। মনসা কৃষ্ণের আরাধনা করলে কৃষ্ণ তুষ্ট হয়ে তাঁকে সিদ্ধি প্রদান করেন এবং প্রথামতে তাঁর পূজা করে মর্ত্যলোকে তাঁর দেবীত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।আবার মনসা মঙ্গল কাব্য অনুসারে শিব ভক্ত চাঁদ সওদাগরের মাধ্যমে মর্তে দেবী মনসার পুজো প্রচলন হয়|

মনসা সর্বাঙ্গে সর্পাভরণভূষিতা এবং পদ্ম অথবা নাগপৃষ্ঠে আসীনা। তাঁর মাথার উপর সপ্তফণাযুক্ত নাগছত্র দেখা যায়। কখনো কখনো তাঁর কোলে একটি শিশুকেও দেখা যায়। মনে করা হয় এটি তাঁর পুত্র আস্তিক। মনসাকে “একচক্ষু কানা” বা বলা হয় বা চাঁদ সদাগরের ভাষায়  “চেঙমুড়ী কানী” দেবীও বলা হয়। কারণ তাঁর একটি চোখ সৎ-মা চণ্ডী কর্তৃক দগ্ধ হয়েছিল|

শ্রাবন মাসে  বর্ষার প্রকোপে সাপের বিচরণ বেড়ে যায়, তাই  সর্পদংশন প্রতিরোধ ও সাপের বিষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে তাঁর পূজা করা হয়। এছাড়া ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতির জন্য মা মনসার পূজা করা হয়। মনসা মূলত একজন আদিবাসী দেবতা। নিম্নবর্ণীয় হিন্দুদের মধ্যে তাঁর পূজা প্রচলিত ছিল। পরবর্তীকালে উচ্চবর্ণীয় হিন্দুসমাজেও মনসা পূজা প্রচলন লাভ করে। বর্তমানে মনসা আর আদিবাসী দেবতা নন, বরং তিনি একজন হিন্দু দেবীতে রূপান্তরিত হয়েছেন।

কিছু পুরানে মনসা দেবীকে শিবের কন্যা রূপেও দেখানো হয়েছে|ভক্তদের কাছে মা মনসা বিষহরি অর্থাৎ বিষনাশকারিণী, জগৎগৌরী, নিত্যা  ও পদ্মাবতী নামেও পরিচিতা|আজ নাগ পঞ্চমী তে মনসার পুজো সনাতন ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব গুলির অন্যতম|

আপনাদের নাগ পঞ্চমীর শুভেচ্ছা জানাই|যারা জ্যোতিষ পরামর্শ বা সমস্যার জ্যোতিষ কেন্দ্রিক সমাধান চান তারা অনুগ্রহ করে উল্লেখিত নাম্বারে যোগাযোগ করুন|ভালো থাকুন|নমস্কার|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here