বাংলার তীর্থ – বসিরহাটের গোকনা কালী মন্দির

442

বাংলার কালী তীর্থ গুলির মধ্যে তারাপীঠ, কালী ঘাট, দক্ষিনেশ্বর বা আদ্যাপীঠ সর্বাধিক জনপ্রিয়তা লাভ করলেও আরো অনেকে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক কালী মন্দির রয়েছে যেগুলি নিয়ে লেখালেখি বা আলোচনা তেমন একটা হয়না তবে যারা আগ্রহী তারা এই কালী মন্দির গুলি দর্শন করতে চাইবেন এবং আধ্যাত্মিক শান্তি লাভ করবেন|

আজ উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটে অবস্থিত গোকনা কালী মন্দির ও মা ভবানীর কথা লিখবো|
এই মন্দিরের মন্দিরের পেছনে রয়েছে একটি প্রাচীন পুকুর, শোনা যায় ডাকাতরা এই মন্দিরের পেছনের পুকুরে ডুব দিয়ে মা ভবানীর পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেত এক কালে|মূল মন্দিরে মা ভবানীরসাথে শিলা খণ্ড রূপে পূজিত হন বৈদ্যনাথ, মানেশ্বর ও পঞ্চানন|অলৌকিক ভাবে এক গ্রামবাসীর চাষ জমিতে লাঙ্গলের ফলায় মাটি খুঁড়তেই পাওয়া যাওয়া এই তিনটি শিলাখণ্ড তারপর তাদের মন্দিরে এনে শাস্ত্র মতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়|

গোকনা কালী মন্দিরে দেবী কালী কে মা ভবানী রূপে পুজো করা হয় এবং পুজো চলে আসছে আনুমানিক পাঁচশো বছর ধরে|এক কালে এই অঞ্চলে ছিল ডাকাতের রাজত্ব, অরণ্যে ঢাকা এই অঞ্চলে দিনের বেলাতেও সূর্যের আলো নাকি ঠিক মতো প্রবেশ করতো না|শোনা যায় ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মা ভবানী’র কাছে প্রার্থনা করত দস্যুরা|এই নিয়ে অনেকে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে এই অঞ্চলে|

মন্দির সংক্রান্ত একটি অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ আছে|কথিত আছে ধান্যকুড়িয়ার জমিদার মহেন্দ্রনাথ গাইনের ছেলে মরণাপন্ন হলে স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি এই মন্দিরে আসেন ও ছেলের প্রান ভিক্ষা করেন, মায়ের আশীর্বাদে জমিদারের ছেলে পুনর্জীবন লাভ করেন। এর ফলে জমিদার মহেন্দ্রনাথ গাইন পাকা গাঁথুনির মন্দির নির্মাণ করে দেন|পরবর্তীতে মায়ের কৃষ্ণ বর্ণের পাথরের মূর্তি চতুর্দোলায় করে আনানো হয় কাশি থেকে|

বসিরহাট সহ গোটা জেলার মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত এই গোকনা কালী মন্দির|এই শীতের মরসুমে যারা তীর্থ স্থান ভ্রমণ করতে চান তারা অবশ্যই এই মন্দির দর্শন করুন ও মা ভবানীর কাছে নিজের প্রার্থনা জানান|আমি নিজে প্রায় প্রতি পূর্ণিমা তিথিতে উপস্থিত থাকি তারাপীঠে এবং প্রতি অমাবস্যা তিথিতে মা মুক্তেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ পুজো ও হোম যজ্ঞর আয়োজন থাকে|যেকোনো সমস্যার তন্ত্র মতে সমাধানের জন্যে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|নমস্কার|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here