বাংলার তীর্থ – তারাপীঠ
সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা তন্ত্র জগতের একটি গুরুত্বপূর্ণ তিথি, আর বাংলার তন্ত্র সাধনার পীঠস্থান তারাপীঠ|তারাপীঠ একা ধারে বাংলার তন্ত্র সাধনার প্রান কেন্দ্র, বশিষ্ঠমুনির সিদ্ধি লাভের স্থান আবার বামা খেপার লীলা ক্ষেত্র|এখানে আসা বা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে তো আর নতুন কিছু বলার নেই তাই আজ নতুন করে বরং তারাপীঠের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য ও ইতিহাস আপনাদের সাথে ভাগ করে নিই|
তারাপীঠ সিদ্ধ পীঠ না কেবল মাত্র একটি জাগ্রত শক্তি পীঠ বা উপপীঠ এ নিয়ে বিতর্ক ও মতান্তর বহু যুগ ধরে চলে আসছে|কথিত আছে বশিষ্ট দেব সাধনা করতেন কামাখ্যায় কিন্তু কোনো কারনে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি কামাখ্যা ত্যাগ করেন ও বাংলার বীরভূমের এই বিশেষ স্থানে এসে পঞ্চমুন্ডীর আসন প্রতিষ্ঠা করে দেবী উগ্রতারার সাধনা শুরু করেন ও সিদ্ধি লাভ করেন|
প্রচলিত বিশ্বাস বলে তারাপীঠের মহাশ্মশানেও জ্যোতিরূপে বাস করেন দেবী|কিংবদন্তী অনুসারে দ্বারকা নদী মহাশক্তির উৎস। এই নদীজলে স্নান করলেই সিদ্ধিলাভের যোগ্যতা অর্জন করেন মানুষ। দূর হয় সব পাপ|আশ্চর্যজনক ভাবে এই নদী উত্তর মুখী|তারাপীঠের পঞ্চমুন্ডীর আসন ও জগৎ প্রসিদ্ধ এই পঞ্চমুণ্ডের আসন আলাদা। এখানে পাঁচটি মুণ্ড সাপের, ব্যাঙের, খরগোশের, শিয়ালের এবং মানুষের। এই আসনে বসেই বহু যুগ পূর্বে দেবীকে তুষ্ট করে তারাপীঠকে সিদ্ধপীঠে পরিণত করেছিলেন ঋষি বশিষ্ঠ পরবর্তীতে বামা ক্ষেপা|
মাতারার মুল প্রস্তর নির্মিত মূর্তি টি রয়েছে একটি ধাতব মূর্তির অভ্যন্তরে|এই মূর্তিটি ভীষণা চতুর্ভূজা, মুণ্ডমালাধারিণী এবং লোলজিহ্বা মূর্তি। এলোকেশী দেবীর মস্তকে রয়েছে একটি রৌপ্যমুকুট |বহির্মূর্তিটি সাধারণট শাড়ি-জড়ানো অবস্থায় গাঁদা ফুলের মালায় ঢাকা অবস্থায় থাকে। মূর্তির মাথার উপরে থাক একটি রূপোর ছাতা|প্রতিকৃতি বিগ্রহের নিচে গোলাকার বেদীতে দুটি রূপোর পাদপদ্ম থাকে|যারা তারা পীঠ মন্দির ও দেবীকে দর্শন করেছেন তারা জানেন উত্তরমুখী আটচালা মন্দিরটি লাল ইঁটে নির্মিত এবং মন্দিরের চূড়ায় একটি তামার পতাকাসহ ত্রিশূল ত্তিনটি পদ্ম ভেদ করে উঠেছে|
আপাতত বিদায় নিচ্ছি এই পর্ব থেকে|দীপান্বিতা অমাবস্যায় আপনাদের মা মুক্তেশ্বরীর মন্দিরেও বিশেষ পুজো ও তন্ত্র মতে গ্রহের প্রতিকার এবং নানাবিধ সমস্যার সমাধান হবে|যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|