বাংলার তীর্থ ক্ষেত্র গুলির মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি জায়গা প্রচারের আলোয় এসেছে|তার বাইরেও আছে অনেক এমন প্রাচীন মন্দির ও ঐতিহাসিক স্থান যা নিয়ে সেই ভাবে আলোচনা বা লেখা লেখি হয়না ফলে জনসমাগম ও হয়না তার মানে এই নয় যে স্থান গুলির ঐতিহাসিক গুরুত্ব কিছু কম|আজ এমনই একটি ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যাওয়ার মন্দিরের কথা বলবো যা আমার শহর, আমার জন্মভূমি মালদায় অবস্থিত|মন্দিরটি পাতাল চন্ডী মন্দির নামে প্রসিদ্ধ|
বর্তমানে পাতালচণ্ডী মন্দিরটি বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ের কাছে ৷ মালদা শহর থেকে দূরত্ব প্রায় 8 কিলোমিটার রয়েছে|
প্রাচীন বাংলার ইতিহাস অনেকটাই অবর্তিত হয় পাল বংশ ও সেন বংশের আশেপাশে আর সেই সময় মালদা ছিলো বাংলার কেন্দ্র যা পরবর্তীতে নবাবি যুগে স্থানান্তরিত হয় মুর্শিদাবাদে|যাই হোক গৌড়ে সেন আমলের একটি পুরাতাত্বিক নিদর্শন পাতাল চন্ডী মন্দির।ইতিহাস বলছে সেন বংশের কূলদেবী ছিলেন চণ্ডী|সেন রাজাদের শাসন কালে রাজধানীর গৌড়ের যে নগর দূর্গ ছিলো তার চারদিকের রক্ষাকর্ত্রী চারজন দেবীর চারটি মন্দির ছিলো তাদের মধ্যে উত্তরদিকের মাধাইচণ্ডীর পীঠ যা বর্তমানে গঙ্গাগর্ভে বিলীন,পূর্বদিকে জহুরাচণ্ডী এবং পশ্চিমে দুয়ারবাসিনী ও দক্ষিণে পাতালচণ্ডী মন্দির|
ঐতিহাসিক তুষারকান্তি ঘোষের বইতে আছে, ১৯২০ র প্রথম দিকে লর্ড কার্জনের ভারতভ্রমণের মানচিত্রতে পাতাল চন্ডীর উল্লেখ আছে|
রাজা বল্লাল সেন যখন গৌড়ের অধিপতি ছিলেন, তখন এই মন্দির নির্মিত হয় বলে ঐতিহাসিকদের ধারণা ৷সেই সময় জলদস্যুদের হাতেই মন্দিরের রক্ষানাবেক্ষনের দায়িত্ব ছিলো কারন মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে যেত পাগলা নদী ৷ জনশ্রুতি আছে যে নৌকা মন্দিরের ঘাটে বেঁধে ডাকাত দল পাতালচণ্ডীকে পুজো করে ডাকাতি করতে বের হত ৷
বর্তমানে সেই রাজাও নেই সেই রাজত্বও নেই
নদীও বেশ খানিকটা দূরে সরে গেছে এবং আগের থেকে সংকীর্ণ ৷ তবে এখনও মন্দিরের পাশে রয়েছে একটি বড় ঝিল যা সেই সময়ের সাক্ষী বহন করে চলেছে নীরবে|
প্রাচীন ইতিহাস যদি আপনার ভালো লাগে আর বাংলার ঐতিহাসিক মন্দির দর্শন করার ইচ্ছা যদি থাকে একদিন চলে আসুন|মাদার পাতাল চন্ডী মন্দিরে|অদ্ভুত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যাবেন|
আপাতত পাতাল চন্ডী মন্দির নিয়ে এখানেই থামছি আবার কলম ধরবো অন্য কোনো ঐতিহাসিক তীর্থ ক্ষেত্র নিয়ে লিখতে|আগামী কাল রবিবার থাকছি মালদা চেম্বারে|চাইলে দেখা করতে পারেনা জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে|ফোন করতে পারেনা উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|দেখা হবে|