আজ ধুনি উৎসব….

139

আজ কের দিন সম্পর্কে পরম পূজনীয় স্বামী ভূতেশানন্দজীর বলে ছিলেন –

” ২৪ ডিসেম্বর শুধু খ্রিস্টান জগতের পক্ষে নয়, রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের পক্ষেও একটি বিশেষ দিন। খ্রিস্টানরা মনে করেন, ২৪ ডিসেম্বর ভগবান যিশু খ্রিস্টের জন্মের প্রাক সন্ধ্যা। আর রামকৃষ্ণ সংঘে একটি বিশেষ দিন হওয়ার কারণ, এই দিনে শ্রী রামকৃষ্ণ পার্ষদগণ আঁটপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগময় জীবন গ্রহণ করার সংকল্প নিয়েছিলেন। এই জন্যই এদিনটি আমাদের কাছে স্মরণীয় দিন হয়ে আছে। শ্রী রামকৃষ্ণ স্থুলদেহে অপ্রকট   হওয়ার পর যেন ভাবমূর্তিতে তাদের হৃদয়ে বিশেষ রূপে প্রকটিত হলেন। তাঁরা সেই ভাবমূর্তিকে হৃদয়ে সমুজ্জ্বল রাখার জন্য সমস্ত প্রাণ মন সমর্পণ করে সাধনায় নিমগ্ন হলেন।এইভাবে তাঁদের জীবনে তীব্র বৈরাগ্যের আগুন জ্বলে ছিল, বাহ্য দৃষ্টিতে সেই আগুন তাঁদের যেমন একদিক দিয়ে অস্থির করেছিল, আরেক দিকে তেমনি সেই আগুনের উত্তাপে জগতের সমস্ত বিষয়ে উদাসীন হয়ে তাঁরা  নিজেদের অন্তরে ডুবে যাচ্ছিলেন। সেখানে শ্রী রামকৃষ্ণের সান্নিধ্য তাদের কাছে ছিল স্পষ্ট , উজ্জ্বল ও প্রেরণাময়। এইভাবে কয়েক মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পর ১৮৮৬ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে তারা নিমন্ত্রিত হয়ে যান বাবুরাম মহারাজের জন্মস্থান *আঁটপুরে* । *নরেন্দ্র, বাবুরাম, শরৎ, শশী, তারক, কালী, নিরঞ্জন, গঙ্গাধর ও সারদা* একত্রিত হয়ে ভগবৎ ধ্যানে মগ্ন হয়ে গেলেন।  আর তাঁদের এক কথা — কী করে এই জীবনকে বৈরাগ্যের অনলে আহুতি দেবেন। এই ভাব নিয়ে দিন রাত কেটে যায়, বৈরাগ্যের আগুন দিন দিন আরও প্রজ্জ্বলিত, ব্যাপকতর হতে থাকে।

আঁটপুরে থাকতে থাকতেই এল *২৪ ডিসেম্বর* — যিশুখ্রিস্টের জন্মের পূর্বদিন। নরেন্দ্রনাথ ও তাঁর গুরুভাইরা যিশুর ভাবে বিভোর হয়েছিলেন, তাঁরা স্থির করলেন আজ ধ্যানে বসা যাক। সন্ধ্যার সময় ধুনি জ্বেলে তাঁরা যিশুখ্রিস্টের জীবন কথা আলোচনা করতে লাগলেন। ক্রমে বৈরাগ্যের প্রবল উদ্দীপনায় তাঁরা স্থির করলেন — আজ এক বিশেষ দিন,আজ আমরা আমাদের সমস্ত বাসনা কামনা এই আগুনে আহুতি দিয়ে ত্যাগময় জীবনের সংকল্প গ্রহণ করব”

–  স্বামী ভূতেশানন্দ

পবিত্র ধুনী দিবসে ঠাকুর, স্বামীজী ও  শ্রী শ্রী মায়ের চরণে শত কোটি প্রনাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here