বেলুড় মঠের প্রতিষ্ঠা দিবস

75

শ্রী অনিকেত

বর্তমান বিশ্বে যে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিষ ক্রমশঃ চড়িয়ে পড়ছে তার প্রধান কারন একটি ধর্মীয় দর্শন যে দর্শন বলে আমার ঈশ্বরই একমাত্র ঈশ্বর, আমার পথই একমাত্র পথ। আর এই দর্শনের ঠিক বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে আছে ঠাকুর রামকৃষ্ণর দর্শন যে দর্শন বলে যত মত ততো পথ। আর এই আদর্শর মূর্ত রূপই হলো বেলুড় মঠ।

স্বামীজী পাশ্চাত্য থেকে ফিরে অনুভব করেন যে একটি স্থায়ী মঠ প্রয়োজন যেখান থেকে ঠাকুরের কাজ পরিচালিত হবে। প্রসারিত হবে।সেই চিন্তা থেকেই হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে কয়েক একর জমি কেনা হয়। সেখানেই ১৮৯৭ সালে ভারতের মহান সেবক স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যান্য শিষ্যরা বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন।মঠের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় পয়লা মে। শ্রম দিবসের দিনে।

বেলুড় মঠের স্থাপত্য এবং পরিচালনা সবই স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা অনুপ্রাণিত।প্রধান মন্দিরটি হিন্দু, খ্রিস্টান, ইসলামিক এবং বৌদ্ধ স্থাপত্য শৈলীর মিশ্রনে সৃষ্টি।শুরুর দিন গুলি সহজ ছিলোনা। বহু কষ্টে। বহু সাধনায় তিল তিল করে গড়ে ওঠে আজকের বেলুড় মঠ। সব জাতীর। সব শ্রেণীর মানুষের শ্রম মিশে আছে বেলুড় মঠের স্থাপত্যে। স্বামীজীর কথায় ভারত বর্ষের মূর্ত রূপ এই বেলুড় মঠ।

মঠেই রয়েছে স্বামীজী,ঠাকুর, শ্রী শ্রী মা এবং প্রথম সংঘ অধীপতি ব্রম্ভানন্দের সমাধি মন্দির। আছে স্বামীজীর ঘর। তার স্মৃতি বিজড়িত আম গাছ আরো অনেক কিছু। রয়েছে বেলুড় সংগ্রহশালা যেখানে আজও ঠাকুর রামকৃষ্ণ , মা সারদা সব স্বামীজীর ব্যাবহিত সামগ্রী স্বযত্নে রক্ষিত আছে।

বেলুড় মঠ ধর্মীয় সম্প্রীতি এবং আধ্যাত্মিক ঐক্যের প্রতীক, যা শ্রী রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের শিক্ষাকে সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে
দেয়ার কাজ করে চলেছে নিরলস ভাবে।বেলুড় মঠ শুধু মিশনের হেড কোর্য়াটার নয় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা রামকৃষ্ণ অনুরাগীদের প্রধান তীর্থ ক্ষেত্র।

আজ প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রনাম এবং শ্রদ্ধা জানাই ঠাকুর রামকৃষ্ণর চরণে। জয় ঠাকুর। জয় মা সারদা। জয় স্বামীজী। জয় দিব্যত্রয়ীর জয়।