জ্যোতিষী শ্রী অনিকেত
শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সম্পর্কে দু এক কথায় কিছু বলা সব থেকে কঠিন কাজ বিশেষ করে আমরা যারা মিশনের সংস্পর্শে এসেছি এবং ঠাকুরের আদর্শে দীক্ষিত তাদের জন্য।ঠাকুরের গোটা জীবনটাই একটা দর্শন, তিনি নিজে একটি প্রতিষ্ঠান। তার জন্ম তিথিতে ওই অনেকটা গঙ্গা জলে গঙ্গা পুজোর মতো তার জীবন এবং আধ্যাত্মিকতা দিয়েই তাকে স্মরণ করা হয়।সহজ কথায় বলতে গেলে বলা যায় তিনি প্রেমের ঠাকুর, যত মত ততো পথ বাণী তিনিই দিয়েছে বিশ্ব কে, আজকের দিনে তার এই ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বড়ো বেশি প্রাসঙ্গিক এবং কার্যকরী।
এই মহান সাধকের আবির্ভাব হয়েছিলো আজকের তিথিতে।সময় টা ১৮৩৫ সাল ঠাকুর রামকৃষ্ণের বাবা ক্ষুদিরাম তীর্থ ভ্রমণে যান। স্বামীর অবর্তমানে রামকৃষ্ণের মা চন্দ্রাদেবী স্বপ্ন দেখলেন একটি জ্যোতির্ময় মূর্তি তার শয্যায় রয়েছেন! তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। কিন্তু তখনও তিনি যেন ঐ জ্যোতির্ময় মূর্তি দেখতে পেলেন। মনে হল কে যেন দরজা ভেঙ্গে তার শয়ন কক্ষে ঢুকছে। তিনি তাড়াতাড়ি উঠে আলো জ্বালেন। কিন্তু দেখলেন, দরজায় খিল দেওয়া আছে এবং ঘরে কেউ নেই।
পরবর্তীতে একবার প্রতিবেশী এক মহিলার সাথে শিব মন্দিরে শিব বিগ্রহের সম্মুখে দাঁড়িয়েছিলেন চন্দ্রা দেবী, শিব বিগ্রহ থেকে একটি জ্যোতির্ময় শিখা বিচ্ছুরিত হয়ে তীর-বেগে তার দিকে ছুটে আসলো। এ সম্পর্কে কিছু বলার আগেই তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। সঙ্গের মহিলা তার চোখে মুখে জল দিয়ে তার মূর্ছা ভাঙ্গিয়ে তাকে ঘরে আনলো। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই সন্তান সম্ভবা হন তিনি।
এইভাবে একাধিক অলৌকিকতার মধ্য দিয়ে ১৮৩৬ খ্রী: ১৮ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আজকের তিথি তে জন্ম হয় গদাধরের। পরবর্তীতে সেই গদাধরই হয়ে ওঠেন ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেব। লীলা সঙ্গিনী হিসেবে পাশে পান সাক্ষাৎ জগদম্বা মা সারদা দেবীকে। এসবই পূর্ব নির্ধারিত। তিনি এসেছিলেন জগৎ কে আলো দেখাতে। শিক্ষা দিতে। কতোটা শিক্ষা আমরা নিতে পেরেছি তার মূল্যায়ন আমাদেরই করতে হবে।
আবির্ভাব তিথিতে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে আমার অন্তরের শ্রদ্ধা ও প্রনাম জানাই।
জয় ঠাকুর। জয় মা।