জ্যোতিষী শ্রী অনিকেত
ইস্কনের সময় টা ভালো যাচ্ছেনা বলাই যায়।কারন তাদের এক তথা কথিত অতি জ্ঞানী সন্ন্যাসী শ্রীরামকৃষ্ণ এবং স্বামীজি সম্পর্কে এমন কিছু বলে ফেলেছেন যা লক্ষ্য লক্ষ্য রামকৃষ্ণ অনুরাগীর মনে আঘাত হেনেছে।বলা বাহুল্য তাদের মধ্যে আমিও একজন।তাই কিছু কথা না বললেই নয়।
প্রথমেই বলি যে ভঙ্গিতে ” ঠাকুরের যত মত তত পথ ” বাণী কে প্রকাশ করা হয়েছে তা অতি নিম্ন শ্রেণীর ব্যাঙ্গাত্মক অভিব্যক্তি এবং নিম্ন রুচির পরিচয় দেয়।যে ভাবে স্বামীজির ধূমপান প্রসঙ্গ টেনে এনে তাকে ব্যাক্তি আক্রমণ করা হয়েছে তাতে বক্তার আক্রোশ এবং প্রতিহিংসা স্পষ্ট।
সেটা হয়তো হীনমণ্যতা বা নিজেকে বিরাট জ্ঞানী প্রতিপন্ন করার কূট কৌশল।
এবার আসি তার বক্তব্যে।” যত মত তত পথ ” এর প্রকৃত অর্থ যদি তিনি বুঝতেন তাহলে ওই ভাবে হাত পা ছুড়ে সব রাস্তাই কি মায়া পুরে যায়? এই ছেদো যুক্তি তিনি দিতেন না। তাই সেই কুখ্যাত থুড়ি বিখ্যাত সন্ন্যাসীর অজ্ঞানতা কে ক্ষমা করাই যায়।
পরবর্তীতে তিনি স্বামীজির গীতা পাঠ এবং ফুটবল খেলার তুলনা প্রসঙ্গে বলেছেন গীতাপাঠের থেকে ফুটবল খেলা শ্রেয় হতেই পারেনা অর্থাৎ স্বামীজি ভুল। আসলে স্বামীজী যে বলতে চেয়েছেন গীতা থেকে যে থিওরিটিকাল জ্ঞান এবং মোটিভেসন আমরা পাই ফুটবল মাঠে তার প্রাকটিক্যাল ব্যবহার সম্ভব সেটা ওই সন্ন্যাসীর মাথায় ঢোকেনি।অবশ্য স্বামীজীর রসবোধ নিরস কেঠো সন্ন্যাসীর মাথায় ঢুকবেনা সেটাই স্বাভাবিক।
ধূমপান প্রসঙ্গেও বলা যায় যে স্বামীজী নিজেকে এই সব সামান্য বিধি নিষেধ থেকে অনেক উর্ধে রাখতেন। তিনি ছিলেন অনেক উচ্চ মার্গের সর্ব ত্যাগী সন্ন্যাসী যারা এক কাপ চায়ে বা এক ছিলিম তামাকে জাত যাবে বলে সদা আতঙ্কিত তারা এই জীবন দর্শনের গভীরতা ধরতে পারবনা সেটাই স্বাভাবিক।
এবার আসি আমিষ নিরামিষ প্রসঙ্গে।আসলে সনাতন ধর্মে আমিষ নিষিদ্ধ এমনটা যারা ভাববে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করবে। তাহলে বেদে উপনিষদে বা মনুস্মৃতিতে সরাসরি নিষেধাজ্ঞা থাকতো।এমনকি গীতায় আমিষ খাওয়া নিষেধ করা হয়নি তাকে তামসিক খাদ্য বলা হয়েছে মাত্র।
স্বামীজী খাদ্য আর ধর্মকে মেলানো পছন্দ করতেন না। তিনি খেতে ভালো বাসতেন। নিজেকে মজা করে বলতেন কচুরি সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসী। আবার এও বলতেন যে ধর্ম ওতো ঠুনকো জিনিস নয় যে এক টুকরো মাংসের আঘাতে তার ক্ষতি হবে।
সমস্যাটা অন্য জায়গায়। যারা শুধু নিজের বৈকুণ্ঠ প্রাপ্তি নিয়ে চিন্তিত আর যারা শিব জ্ঞানে জীব সেবা নিয়ে ব্যাস্ত তাদের মধ্যে তফাৎ তো থাকবেই।
ঠাকুরের আশীর্বাদে তাদের একদিন চৈতন্য হবেই।