শক্তিপীঠ কামাখ্যায় শ্রী অনিকেত

98

বর্তমানে আমি আছি ভারতের ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম পীঠ কামাখ্যায় ভৌগোলিক ভাবে যা  আসামের নীলাচল পাহাড়ের পশ্চিমে গুয়াহাটি শহরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত। আমরা যারা জ্যোতিষ বা তন্ত্রের সাথে জগতের সাথে সম্পর্ক রাখি তাদের কাছে কামাখ্যা হলো মহা তীর্থ এবং তন্ত্র স্বাধনার ও বিশেষ তন্ত্র ক্রিয়ার জন্য আদর্শ স্থান।তাই যাওয়া আসা লেগেই থাকে এখানে। এবার ভাবলাম আমার অভিজ্ঞতা ও পড়াশোনা কিছুটা ভাগ করে নিই।

তন্ত্রের সাথে কামাখ্যার সম্পর্ক একদম আদি লগ্ন থেকে বলা যায় কারন প্রাচীনকালে কামাখ্যা ছিল খাসি উপজাতির বলি দেয়ার স্থানআজও বলিদান এখানে পূজার অঙ্গ। পুজোও হয় তন্ত্র মতে।

শাস্ত্রের কথা বলতে গেলে কালিকা পুরান অনুসারে
ভগবান শিব এর তরুণী পত্নী।তন্ত্র মতে দেবী কামাখ্যা সৃষ্টির আধার হিসেবে ও পরিচিত ।
এই কামাখ্যা মন্দিরে সতী শিবের সঙ্গে বিহার করেন এবং পুরানে এও উল্লেখ আছে যে শক্তি পীঠ কামাখ্যায় পূজা করলে সকল ইচ্ছা পূর্ণ হয়।

আবার অন্য দিক দিয়ে দেখতে গেলে কামরূপের পাল রাজারা যেহেতু তন্ত্রসাধনায় বিশ্বাসী ছিলেন তাই সেই সময় থেকেই কামাখ্যা মন্দির তন্ত্রসাধনার মূল পীঠস্থানের পরিচিতি পায় ।

এবার আসি স্থাপত্যর দিকে।কামাখ্যা মন্দিরে চারটি কক্ষ আছে, গর্ভগৃহ ও তিনটি মণ্ডপ যেগুলির স্থানীয় নাম চলন্ত, পঞ্চরত্ন এবং নাটমন্দির। গর্ভগৃহটি পঞ্চরথ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত।গর্ভগৃহটি আসলে ভূগর্ভস্থ একটি গুহা। সেখানে কোনো মূর্তি নেই আছে একটি যোনি আকৃতিবিশিষ্ট পাথর এবং প্রাকৃতিক গহবর যা একটি ভূগর্ভস্থ প্রস্রবনের জলে যা পরিপূর্ণ হয়।গর্ভগৃহের প্রস্রবনের জল লাল বর্ণর হয়। বিজ্ঞান বা যুক্তিবাদীরা বলে আয়রন অক্সাইডের প্রভাবে
জল লাল হয়। তবে আস্থা ও শ্রদ্ধা বলে অন্য কথা।

মধ্যযুগীয় সময়ে এই মন্দির ধ্বংসের এবং নব রূপে সংস্কারের বহু ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই বহু আলোচিত ঐতিহাসিক সাল তারিখে ও ঘটনাবলীর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাচ্ছিনা তবে সংক্ষেপে এটুকু বলা যায়। আজও দেবী কামাখ্যার এই অপূর্ব সুন্দর মন্দির বহু অলৌকিক ঘটনা এবং বহু রহস্য নিয়ে স্বমহিমায় বিরাজমান।

আপাতত আছি কিছুদিন।হোম যজ্ঞ পুজো সবই পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুসারে হবে। সর্বপরি দেবী দর্শন ও তার আশীর্বাদ পেয়ে আমি ধন্য।আপনারাও সময় ও সুযোগ পেলে কামাখ্যা দর্শন করুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here