ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য

113

জ্যোতিষী শ্রী অনিকেত

আপনারা জানেন আমি নিজের গৃহ মন্দিরে প্রতিবার স্বামীজি এবং ঠাকুর এবং মা সরদার জন্মথিতি পালন করে থাকি নিজের মতো করে।আজ ঠাকুর রামকৃষ্ণের ১৮৮ তম জন্ম তিথি প্রতিবছর এই দিনে তাকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানিয়ে কিছু লিখি।

ঠাকুর রামকৃষ্ণের জন্মের আগে থেকেই তাঁর জন্মের নানা অলৌকিক পূর্বাভাস তাঁর পিতামাতা পেয়েছিলেন বলে শোনা যায়। ১৮৩৫ সালে রামকৃষ্ণের পিতা ক্ষুদিরাম তীর্থ ভ্রমণার্থে গয়া গমন করেন। সেখানে এক রাত্রে ঘুমের মধ্যে তাঁর স্বপ্নে আবির্ভূত হন বিষ্ণু-অবতার গদাধর। স্বপ্নেই গদাধর বলেন যে, তিনি ক্ষু‌দিরামের সন্তান রূপে অবতীর্ণ হবেন ধরাধামে। এই ঘটনার এক বছর পর আজকের পরে জন্ম হয় রামকৃষ্ণের।যার জন্ম এমন অলৌকিক ঘটনার সাথে জড়িত তিনি কোনো সাধারণ মানুষ নয় তা সহজেই অনুমেয়।

ঠাকুর  রামকৃষ্ণের সারা জীবন জুড়ে রয়েছে বহু অলৌকিক ঘটনা যার উল্লেখ পাওয়া যায় কথামৃত সহ একাধিক গ্রন্থে ও ঠাকুরের পার্শদদের জবানবন্দি থেকে|

শোনা যায় পিতা ক্ষুদিরাম যখন গয়ায় তখন রামকৃষ্ণের জননী চন্দ্রাদেবী একদিন শিব মন্দিরে গিয়েছিলেন পূজা দিতে। সেখানে এক অলৌকিক অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। তিনি প্রত্যক্ষ করেন, এক দিব্যজ্যোতি মহাদেবের শ্রীঅঙ্গ থেকে নির্গত হয়ে প্রবেশ করছে তাঁর শরী‌রে। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই গর্ভবতী হন চন্দ্রা দেবী।পরবর্তীতে নিদ্দিষ্ট সময়ে ভূমিষ্ট হন ঠাকুর রামকৃষ্ণ।

পরবর্তীতে তার সারা জীবন জুড়ে আরো বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে যা ঠাকুরের দৈব সত্ত্বাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সারা বিশ্বে |যদিও ঠাকুরের অবতার তত্ত্ব নিয়ে সেকালে অনেকেরই সন্দেহ ছিলো। কিছু পন্ডিত মনে করতেন অবতার হতে গেলে যে যে গুণাবলী থাকা প্রয়োজন তার সব গুলোই রয়েছে ঠাকুরের মধ্যে আবার কয়েকজন তার বিরোধীতা করে ঠাকুর কে অবতার মানতে চাননি। কথিত আছে একবার ঠাকুরকে অবতার ঘোষণা করার জন্য দক্ষিনেশ্বরে একটি সভাও বসেছিলো যাতে ভাগ নিয়েছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের সব রথী মহারথীরা।

ঠাকুর রামকৃষ্ণ বিষ্ণু অবতার কিনা সেটা বড়ো কথা নয়। তিনি ছিলেন যুগাবতার। তিনি এসেছিলেন শিব জ্ঞানে জীব সেবা শেখাতে এবং সেই কাজে তিনি সম্পূর্ণ রূপে সফল। যতদিন পৃথিবী থাকবে বেঁচে থাকবে তার দর্শন তার আদর্শ।

আজ ঠাকুরের জন্মতিথিতে তার চরণে আমার প্রণাম ও শ্রদ্ধাঞ্জলি রইলো|জয় শ্রী রামকৃষ্ণ।