কল্পতরু উৎসব এবং নতুন বছরের শুভেচ্ছা

122

বাকিদের কাছে আজ ইংরেজি নববর্ষের সূচনা তাই প্রথমেই জানাই হ্যাপি নিউ ইয়ার, যাই হোক আজ শুধু বছরের প্রথম দিন নয়, আজকের দিনটি অর্থাৎ এই পয়লা জানুয়ারি আরো একটি কারনে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, আজ কল্পতরু উৎসব|আজকের দিনে যুগাবতার ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ তার গৃহী ভক্তদের কাছে হয়ে উঠেছিলে কল্পতরু|

ঠাকুর তখন শারীরিক ভাবে বেশ  অসুস্থ উত্তর কলকাতার কাশীপুর অঞ্চলের একটি বাগান বাড়িতে চিকিৎসার সুবিধার জন্য ঠাকুরকে নিয়ে আসা হয়েছিল। পয়লা জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি বাগানে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর বিশেষ অনুগামী নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষকে ঠাকুর জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তোমার কী মনে হয়, আমি কে?” উত্তরে গিরিশ ঘোষ বলেন যে রামকৃষ্ণ পরমহংস “মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের এক অবতার।” এই কথা শুনে সেদিন ঠাকুর বলেছিলেন, “আমি আর কী বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।”

পুরান মতে কল্প তরু হলো স্বর্গ লোকে অবস্থিত একটি বিশেষ বৃক্ষ যার কাছে প্রার্থনা করলে সব মনোস্কামনা পূর্ণ হয় |মনে করা হয় ওই বিশেষ সময়ে ঠাকুর পুরানে বর্ণিত কল্পতরু বৃক্ষ রূপে দেখা দিয়েছিলেন তার গৃহী ভক্ত দের, সকলের সব মনবাঞ্চা পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন তিনি, তবে চৈতন্য হোক মানে জাগতিক চাওয়া পাওয়ার বাইরে গিয়ে নিজের মধ্যে অন্তর্নিহিত ঈশ্বর চেতনার সাথে পরিচয় লাভ, এই চেতনা লাভ মানে পরম জ্ঞানের অধিকারী হওয়া, জাগতিক কামনা বাসনা থেকে মুক্ত হওয়া|

চৈতন্য হোক বলার পরেই তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। সেই স্পর্শ ছিলো বিদ্যুৎ তরঙ্গের মতো ও আধ্যাত্মিক ভাবে এক অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন যা সেখানে উপস্থিত ভক্তদের আচ্ছন্ন করে ফেলে|

পরবর্তীতে কলকাতায় ১৮৮৬ সালের পয়লা জানুয়ারি সূচনা হয়েছিল এই উৎসবের, আজও এই দিনে  মঠ ও মিশনের প্রতিটি শাখায় পালন হয় কল্পতরু উৎসব|গৃহী ভক্তরা বিশেষ করে পালন করেন এই উৎসব|নতুন বছর কে বরণ করান নিজের মতো করে, পালন করুন কল্প তরু উৎসব  সবাইকে কল্পতরু উৎসবের অনেক শুভেচ্ছা|ঠাকুর রামকৃষ্ণের জয়|ভালো থাকুন|নমস্কার