শ্রী শ্রী মা সারদার জন্ম তিথিতে প্রনাম ও শ্রদ্ধার্ঘ্য

144

আজ মা সারদার  একশো সত্তর তম জন্ম তিথি|এদিন স্বাভাবিক ভাবেই বিশেষ সাজে সেজে ওঠে বেলুড় মঠ থেকে জয়রাম বাটি|অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয় মঠের প্রতিটি শাখায়|

মা সারদা ছিলেন যথার্থ অর্থে ঠাকুরের লীলা সঙ্গিনী   ‘যত মত তত পথ’-এর প্রবক্তা ঠাকুরকে সাধনভজনের চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে মা সারদা ছিলেন সদা নিবেদিতপ্রাণ।মা সারদা বলতেন ” আমি সৎ এর মা অসৎ এর ও মা ”  আবার ঠাকুর রামকৃষ্ণ প্রসঙ্গে এও বলতেন সংসারের মধ্যে তাঁকে রামকৃষ্ণদেবকে আবদ্ধ করে রাখতে তিনি আসেননি|তার কাছে আসা
ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলতেন, ‘আমি আর কী উপদেশ দেব। ঠাকুরের কথা সব বইয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। তাঁর একটা কথা ধারণা করে যদি চলতে পার, তো সব হয়ে যাবে।’ এমনই ছিলো ঠাকুরের প্রতি তার অগাধ বিশ্বাস ও নিষ্ঠা|

শ্রীরামকৃষ্ণ লীলাসঙ্গিনী হিসাবে সারদা দেবীর বিশেষ পরিচয় আমরা কমবেশি সকলেই জানি। ঠাকুর বলেছেন, তাঁর সাধনপথে যথাযথ সহযোগিতা করেছেন মা সারদা।আজও রীতি মেনে বরানগর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রমে দুর্গারূপে পূজিতা হন মা সারদা।সেই ১৯৪৪ সাল থেকে মা সারদার প্রতিকৃতিকে দুর্গারূপে পুজো হয়ে আসছে বরানগর আশ্রমে। স্বামী বিবেকানন্দ মা সারদাকে জ্যান্ত দুর্গা রূপে বর্ণনা করেছিলেন। স্বামীজি বলেছিলেন, মা তো সাধারণ মা নন। তিনিই দুর্গা, তিনিই সরস্বতী, তিনিই লক্ষ্মী। তাঁর সেই বর্ণনা অনুযায়ীই বরানগর আশ্রমে সারদা মূর্তিতে দুর্গাপুজো চলে আসছে। নিত্যপূজিতা সারদা মূর্তিটিই লক্ষ্মী ও সরস্বতী রূপেও পূজিতা হন।

শুধু সাধারন নয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছিলেন সেই বিপ্লবীরাও ছুটে আসতেন সারদামণির কাছে|বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ লিখেছেন, ‘ওই শান্ত সমাহিত নীরব জীবনের মধ্যেই রয়েছে অতিবিপ্লবের বীজ। রামকৃষ্ণ-সারদা-বিবেকানন্দ— এই ত্রয়ী এক মহাবিপ্লবের প্রতীক’। সারাটা জীবন তিনি উৎসাহ দিয়ে গেছেন যেকোনো ভালো কাজে, সারা দেশ তার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে|বিপ্লবীরাও ছিলো সেই দলেই|শুধু গিরিশ ঘোষ নরেন বা রাখাল মহারাজ নয় রঘু ডাকাত ও মায়ের কৃপা পেয়েছেন|

আজ এই পুন্য তিথিতে শুভেচ্ছা জানাই প্রত্যেক ভক্তকে, প্রণাম ও শ্রদ্ধ জানাই সংঘ জননী মা সারদার চরণে|

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here